সমস্ত লেখাগুলি

বিজ্ঞানের বিকাশ ও শোষণের প্রক্রিয়া বদল -
প্রবীর ব্যানার্জি
Nov. 23, 2024 | রাজনীতি | views:283 | likes:0 | share: 0 | comments:0

সামন্ততান্ত্রিক পরিকাঠামো পাল্টে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার প্রবর্তনে বিজ্ঞানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ইউরোপে পঞ্চদশ - ষোড়শ শতকে নবজাগরণ (রেনেসাঁস) এবং ধর্মসংস্কার (রিফরমেশন) আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল। সামন্ততন্ত্র থেকে পুঁজিবাদী রূপান্তরের এই পর্বে পুঁজিবাদ সহায়তা করেছিল বিজ্ঞানকে বিজ্ঞান পুঁজিবাদকে। সমাজ বলতে এখানে আর্থসামাজিক অবস্থাকে ধরা হচ্ছে।

কৃষিক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পেল এবং আগেকার স্থানীয় চাহিদা নির্ভর যে উৎপাদন ব্যবস্থা  তা বদলে গিয়ে কৃষিতে উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হলো। এই উদ্বৃত্ত উৎপাদন কেন্দ্র করে সামুদ্রিক বাণিজ্য বিকাশ ঘটলো। অবশ্যই নৌ-পরিবহনে তা উদ্দীপনা প্রদান করলো। অর্থাৎ আগেকার আর্থ-সামাজিক অবস্থা বদল হবার জন্যই হাত পাততে হলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কাছে। কম্পাসের উদ্ভাবন নাবিকদের অকূল সমুদ্রে দিকনির্দেশ করতে সহায়তা করলো। আবিষ্কৃত হলো অ্যাস্ট্রোল্যাব যন্ত্র, যার সাহায্যে কোনো স্থানের অক্ষাংশ নির্ণয় করা যায়। পাশাপাশি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের চর্চা আর্থসামাজিক প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলো। জলপথে সড়কপথের তুলনায় কম খরচে ও কম সময়ে অন্যত্র পৌঁছানোর সম্ভব হলো। ধাতু এবং কাঠ ব্যবহার করে জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে উন্নত করতে দ্বারস্থ হতে হলো আবার বিজ্ঞানের। সামাজিক প্রয়োজনে বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটল। আবার অন্য ভাবে বললে বিজ্ঞানের বিকাশ সামাজিক পরিবর্তনকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলল।

নৌবাহিনীতে শক্তিনালী দেশ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা লাভ করে। এক্ষেত্রে অগ্রগণ্য দেশ হলো স্পেন ও পর্তুগাল, পরবর্তীতে ইংল্যান্ড এবং হল্যান্ড। ফান্স ও জার্মানি তাদের আগের ক্ষমতা হারাতে থাকে। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি রাষ্ট্রব্যবস্থার ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা নিচ্ছে।

আবার যুদ্ধে বারুদের ব্যবহার নির্ণায়ক হয়ে উঠলো। উদাহরণ - ১৪৮৫ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বসওয়ার্থের যুদ্ধ। বারুদের সাহায্যে যুদ্ধ জয়ের পর টিউডর রাজতন্ত্র সূচনা হয়। মাত্র আটত্রিশ বছর পর ১৫২৬ এ পানিপথের প্রথম যুদ্ধে জয়লাভ করে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের পত্তন।

আবার এই বারুদ ও গুলির ক্ষত নিরাময়ের জন্যও বিজ্ঞানের ডাক পড়ল। অ্যামবোয়াজ পারে (Ambuois Pare) শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে অস্ত্রপচারের কৌশল দেখালেন। এর পাশাপাশি বিকাশ ঘটল শারীরতত্ত্ব (ফিজিওলজি) এবং বিকারতত্ত্ব (প্যাথোলজি)। শল্য চিকিৎসার বিকাশের স্বার্থে শরীরসংস্থানবিদ্যা (অ্যানাটমি)-র বিকাশের প্রয়োজন ছিল। উল্লেখযোগ্য নাম এই বিষয়ে বেলিলিয়াস, যিনি লিখলেন মানব শরীরের গঠন (De Humani  Corpoloris Fabrica)। 

জাঁ ফার্নের প্যাথোলজি সম্বন্ধে চর্চা করলেন। একইসঙ্গে রোগ নিরাময়ে এবং শিল্পকলা চর্চাকে এই জ্ঞান  ভীষণ ভাবে সহায়তা করলো।

অ্যানাটমি রেনেসাঁস শিল্পীদের প্রভাবিত করে। শিল্পীর বৈজ্ঞানিক ভিত্তির বিকাশ ঘটে। এর জন্য শিল্পীরা আলবের্তীর কাছে ঋণী। যিনি বলেছিলেন মানবদেহের স্তরভেদে আঁকা উচিত; অর্থাৎ প্রথমে অস্থির কাঠামো আর শেষে চর্ম আবরণ, মাঝে পেশিকলা, শিরা-ধমনী ইত্যাদি। এই বিজ্ঞানের বিকাশ ঘটার ফলে সমৃদ্ধ হলো শিল্প। আর্নল্ড হসারের লেখা বই Social History of art এ প্রকাশ পায়, জ্যামিতি, গণিত, বলবিদ্যা, আলোকবিজ্ঞান ইত্যাদি হলো এই শিল্পকলার নানান উপাদান।

রেনেসাঁস শিল্পীরা একাধারে শিল্পী আরেক দিকে কেউ কেউ বিজ্ঞানেও বিশেষ বুৎপত্তি লাভ করলেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় লিওনার্দো দা ভিঞ্চি আলোকবিদ্যা, শরীরসংস্থানবিদ্যা, প্রাণীকূল, গাছপালা, শিলাপাহাড় প্রভৃতি নানা বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন। তিনি ছিলেন এ যুগের এক সার্থক প্রতিনিধি।


আরেকটা মাইলফলক বিজ্ঞানের পক্ষে গুটেনবার্গের মুদ্রণযন্ত্র। বই ও কাগজপত্রের মাধ্যমে ছাপার অক্ষরে জ্ঞানের সমৃদ্ধি ও বিস্তার লাভ ঘটল। বুর্জোয়াদের আগ্রহ বাড়ল শিল্পকলা, ভ্রমণ ও ভূগোল বিষয়ক লেখাপত্তরে। 

এতদিনের ধর্মকেন্দ্রিক শিক্ষার বদলে চর্চা শুরু হলো মানবতাবাদী শিক্ষার যার হাত ধরে উঠে এলো নতুন চিন্তক  শ্রেনী, যাদের বলা হতো মানবতাবাদী বা হিউম্যানিস্ট।

 এদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো মানুষ। বিনা প্রশ্নের মেনে নেওয়ার বদলে জন্ম হলো জিজ্ঞাসার।

ক্যাথলিক চার্চের বাইবেল ছিল সাধারণের দুর্বোধ্য (আমাদের সংস্কৃতের মতো) ল্যাটিন ভাষায়। মার্টিন লুথার জার্মান ভাষায় এর অনুবাদ ছাপালেন। বাইবেল আর সাধারণের নাগালের বাইরে রইলো না। বিভিন্ন জনগোষ্ঠী তাদের ভাষায় এর অনুবাদ ছাপালেন। চার্চের কর্তৃত্ব খর্ব হতে লাগল।অর্থাৎ  বলা যায় যে বিজ্ঞান  বা প্রযুক্তিগত অগ্রগতিই সমাজের একটা গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন (রিফরমেশন) বিকাশকে সম্ভব করে তুলল।


এবার বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের সংঘাত অন্য বিষয়ে শুরু হলো। বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ড কিভাবে গঠিত এই বিষয়ে প্রাচীন ধারণার  সাথে নব্য আধারিত জ্ঞানের। টলেমি এবং অ্যারিস্টটলের ভূ-কেন্দ্রীয় মতবাদ  বনাম ব্রুনো/কোপারনিকাসের সৌরকেন্দ্রিক মতবাদ। ততদিনে জ্যোতির্বিজ্ঞান অনেক উন্নত হয়ে গেছে।নিকোলো কোপার্নিকাশ দেখালেন পৃথিবী তার নিজ অক্ষকে ঘিরে সূর্যের চারপাশে পাক খাচ্ছে। চার্চের মত ছিল ঈশ্বর পৃথিবীর জন্মদাতা, তাই পৃথিবী বিশ্ব ব্যবস্থার কেন্দ্রে আসীন। তাকে কেন্দ্র করে গ্রহ ও নক্ষত্র ঘুরছে।বিতর্ক শুরু হলো। যদিও কোপার্নিকাশ সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন নি। সেগুলো সমাধান করলেন কেপলার, টইকো ব্রাহে, গ্যালিলিও প্রমুখেরা। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের এই মতবাদ আসলে চার্চ আর বাইবেলের অস্তিত্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।এককথায় বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান স্পৃহা সামাজিক ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করলো।


আবার অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনে বিজ্ঞানের বিকাশ অনেকাংশে সাহায্য করল।পুঁজিবাদের বিকাশ বিজ্ঞানের হাত ধরে উঠে এলো। খনি শিল্প, ধাতুবিদ্যায় এবং রাসায়নিক শিল্পের ক্রোমোন্নতি, পুঁজি বিনিয়োগ ও বিকাশের সহায়ক হয়ে উঠলো। খনিজ গবেষণা রসায়নের বিকাশকে ত্বরান্বিত করলো। রসায়নের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ ডে রে মেটালিকা(De Re Metallica)। নতুন নতুন ঔষধ আবিষ্কার হলো।অর্থাৎ বিজ্ঞান চর্চার লক্ষ্য হলো সামাজিক চাহিদা পূরণ।


সামরিক প্রযুক্তি, মুদ্রণ ব্যবস্থা, ভৌগলিক অভিযানের সহায়ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন  যেমন আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে অনেকাংশে পরিবর্তিত করেছিল, তেমনি বিশ্ববীক্ষণকেও বদলে ছিল। চিকিৎসাবিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান  ইত্যাদির অগ্রগতি সামগ্রিকভাবে সামাজিক উৎকর্ষ সাধন করেছিল। এই পুরো বিষয়টি ছিল দ্বিমুখী। একদিকে যেমন বিজ্ঞান সমাজকে প্রভাবিত করেছিল, অন্যদিকে আবার সামাজিক প্রয়োজনেই বিজ্ঞানের বিকাশ সম্ভব হয়েছিল। আর এই প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান  ব্যবহৃত হয়েছে ঔপনিবেশিক শক্তির বিকাশে এবং পুঁজিবাদের উত্থানে।

কৃতজ্ঞতা স্বীকার:

ঔপনিবেশিক ভারতে বিজ্ঞান

সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়

সুজিত রাজবংশী

অ্যালোপ্যাথি বনাম গেলোপ্যাথি -
প্রবীর ব্যানার্জি
Nov. 21, 2024 | বিজ্ঞানমনস্কতা | views:2572 | likes:0 | share: 0 | comments:0

প্রথম পর্ব।

শুনুন বন্ধু। আমি ডাক্তার নই। তাই বলে চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে কিছুই বলতে পারব না এমন নয়। আমি যেমন জ্যোতিষী নই, তাই বলে জ্যোতিষ শাস্ত্র সম্পর্কে কিছু বলতে পারব না এটা হতে পারে না। ব্যাপারটা হচ্ছে আপনি রান্না করতে পারেন না বলে তাতে নুন, ঝাল, মিষ্টি ঠিক আছে কিনা এটা বলার অধিকার নেই? বিরাট কোহলি আউট হয়েছে কিনা এটা বলার জন্য আম্পায়ার কে শচীনের সমান ব্যাটসম্যান হতে হবে নাকি? আশাকরি সবাই বুঝতে পারলেন আমি কি বলতে চাইছি।

অর্থাৎ আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি, আকুপাংচার, য়ুনানি, নেচারোপ্যাথি এরা আদবেই চিকিৎসার যোগ্যতা অর্জন করেছে কিনা সেটা বোঝার জন্য ঐ বিষয়ের বিশেষজ্ঞ হতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা আছে বলে আমি মনে করি না। আর অ্যালোপ্যাথি বলে কোনো চিকিৎসা নেই। হোমিওপ্যাথির প্রবক্তাই এরকম একটি নামকরণ করেছেন।আসল কথা হলো উন্নত ও বিকশিত যে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান তাকেই অ্যালোপ্যাথি বলে। তাহলে আলোচনায় সুবিধার জন্য অ্যালোপ্যাথি বলতে বিজ্ঞান সম্মত উন্নত চিকিৎসাকেই বুঝব। আর গেলোপ্যাথি বলতে বিকল্প চিকিৎসা সেবা কে বুঝব। এই দলটি কিন্তু অনেক বড়ো। আসুন সবাই কে চিনিয়ে দিই। তালিকা বেশ বড়সড়।


বিকল্প চিকিৎসা:

আয়ুর্বেদ (ভারত), হোমিওপ্যাথি(জার্মানি), আকুপাংচার(চীন), য়ুনানি(গ্রিস), নেচারোপ্যাথি(ইউরোপ), অ্যারোমাথেরাপি, রেইকি, সম্মোহন চিকিৎসা, যোগ, সংযোগ স্থাপন করা সঙ্গীত চিকিৎসা, ফেইথ হিলিং, অর্থোমলিকিউলার থেরাপি, ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট, মূত্র চিকিৎসা, বায়োফিডব্যাক, অস্টিয়োপ্যাথি, কিরোপ্রাকটিক, আকুপ্রেসার, আলেকজান্ডার টেকনিক, রলফিং, সিয়াৎসু, রিফ্লেকশোলজি, বিভিন্ন ধরনের ম্যাসাজ, থেরাপিউটিক টাচ, কি গং, চুম্বক চিকিৎসা, ফেং শ্যুই, তাই কি, নানা ধরনের তড়িৎচুম্বকিয় ব্যবহার, সেলুলার থেরাপি (আইসোপ্যাথি থেকে), চিলেশন থেরাপি, অক্সিজেন থেরাপি, নানা ধরনের অপরীক্ষিত ক্যান্সার চিকিৎসা,অ্যানথ্রপোসফিক মেডিসিন,বায়োকেমিক, ফ্লাওয়ার রেমিডিজ, ইলেকট্রো হোমিওপ্যাথি, আইসোপ্যাথি, লিথোথেরাপি, কালার ও লেসার আকুপাংচার,জল চিকিৎসা (হাইড্রো থেরাপি), থ্যালাসোথেরাপি, ইরিডোলজি, ডাউসিং, সাইয়োনিক চিকিৎসা, বায়োরেসোন্যান্স, কিনেসিওলজি, কিরলিয়ান ফটোগ্রাফি, ভেগা টেষ্ট, ফ্রেনোলজি। বুঝতে পারলাম। বেশ হাঁপিয়ে গেছেন। সেই জন্য সব নাম দিলাম না। আরো আছে।

প্রশ্ন হচ্ছে এতো চিকিৎসা কেন? মানুষ কে পূর্ণ সুস্থতা দেওয়ার দায়িত্ব কার। রাষ্ট্রের না ব্যক্তির নিজের? এরকম প্রশ্ন উঠেছে।

সবকটা বিকল্প চিকিৎসা আলোচনা সম্ভব নয়। আসুন কয়েকটি বেছে নিই।


আয়ুর্বেদ:

আয়ুর্বেদ বলতে আমরা আজকে যেটাকে জানি,সেটা শুধুমাত্র কতকগুলো গাছগাছড়া আর দেশীয় উপকরণ দিয়ে তৈরি একটা চিকিৎসা পদ্ধতি। সেই সঙ্গে রয়েছে নিদান--মানে অসুখটাকে কিভাবে নির্ণয় করবে, তা নিয়ে কিছু কথাবার্তা। আসল আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা কিন্তু চিকিৎসা শাস্ত্রের মতো সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র 'এনটিটি'। এটা হোলিস্টিকা। এতেও আছে এনাটমি, ফিজিওলজি, ফার্মাকোলজি, প্রিভেন্টিভ এন্ড স্যোসাল মেডিসিন, আছে 'আই', 'ইএনটি', সার্জারি বিভাগ। কিন্তু আয়ুর্বেদে উপযুক্ত লোক ছিল না। তাই আস্তে আস্তে অনেক ধারা লুপ্ত হয়ে যায়। কিছুটা সুশ্রুতের সার্জারিতে আর কিছু চরকের বইতে থাকে। তাকে বারবার সম্পাদনা করা হয়েছে। এটা আয়ুর্বেদের পূর্ণ পরিচয় নয়।

খ্রিষ্টের জন্মের কয়েক হাজার বছর আগে ভারতের সমস্ত বিজ্ঞান বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থান লাভ করে ছিল এই আয়ুর্বেদ। প্রথমে এটি ছিল চরম বস্তুবাদী বিজ্ঞান। এখানে দৈবের অস্তিত্ব স্বীকার করা হয় নি। ফলে এই মতবাদ প্রচারে এলে দৈবমহিমা কে মূলধন করে যারা ব্যবসা করেন, তাদের সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা ‌ছিল। কায়েমী স্বার্থবাদী লোক তাই এদের উপর চরম অত্যাচার নিপীড়ন নামিয়ে আনে। এদের নিগৃহীত করে, হত্যা করে, পুঁথিপত্র ধ্বংস করে নিঃশেষ করে দেয়ার প্রচেষ্টা চলে। এরপরে যা কিছু বইপত্র ছিল তাদের একত্র করে তার মধ্যে দৈবের সংযুক্তি ঘটিয়ে তাকে পুনরুজ্জীবিত করে তোলার চেষ্টা করে একদল গবেষক। চরক-সুশ্রুত সংহিতার কথা আগেই বলেছি। তারফলে বিজ্ঞান ভিত্তিক একটা দর্শন ধ্বংস হয়ে ঈশ্বর ভিত্তিক একটি চিকিৎসা শাস্ত্রের দর্শন চালু হয়। সৃষ্টি হয় ত্রিদোষ তত্ত্বের(বায়ু, পিত্ত, কফ)। মানবশরীর পঞ্চভূতের সমাহার। যা আসলে ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম। আর অসুখের ব্যাখ্যা ছিল পঞ্চভূতে ভারসাম্যহীনতা। চিকিৎসকের কাজ ছিল এই পঞ্চভূতের ভারসাম্য রক্ষা। এখানে স্পষ্ট করে বলা ছিল রোগ সৃষ্টি ও নিরাময়ে দৈবের কোনো ভূমিকা নেই কিন্তু পরিবর্তিত তত্ত্বে এলো বায়ু, পিত্ত, কফ ভিত্তিক ত্রিদোষ তত্ত্ব। এখনো পর্যন্ত এই তত্ত্ব চালু আছে। যদিও তার কিছু রূপান্তর হয়েছে। এটাই কবিরাজি বলে পরিচিত। ও হিন্দি তে vaid.


দ্বিতীয় পর্ব।

ভেবেছিলাম পরে আলোচনা করবো। কিন্তু যে হারে প্রশ্ন আসছে তাতে বিষয়টাকে আগেই বলে নিচ্ছি।একটা কথা গেলোপ্যাথির লোকজন প্রায় আলোচনা করেন যে অ্যালোপ্যাথিতে বড্ড বেশি সাইড এফেক্ট আছে। আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সেবা তে এসব নেই।

নিউটনের তৃতীয় সূত্র মনে পড়ে। মহাশয়, যাহার ক্রিয়াই নেই তাহার কিরুপ প্রতিক্রিয়া থাকিবে? যাইহোক আপনার/আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে অত নিশ্চিন্তে আয়ুর্বেদিক ওষুধ খেয়ে পেটে হাত বুলাতে বুলাতে ঢেকুর তোলার আগে জেনে নিন,২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে জার্নাল অব আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন(JAMA) ও ২০০৫ সালে হেলথ কানাডা তে প্রকাশিত গবেষণা পত্র থেকে আয়ুর্বেদিক ওষুধ এর নমুনায় আর্সেনিক, সীসা, পারদ ও দস্তার মতো শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর ভারী ধাতুর উপস্থিতির কথা জানা গেছে।হেলথ কানাডা ১২টি আয়ুর্বেদিক ওষুধ না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে( Health Canada warns consumers not to use certain Ayurvedic medicine products,2005)।  JAMA তে প্রকাশিত গবেষণা পত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রস্তুত ৭০টি পরীক্ষিত আয়ুর্বেদিক নমুনার মধ্যে ১৪টিতে বিপজ্জনক সীসা, পারদ ও আর্সেনিকের উপস্থিতির খবর প্রকাশিত হয়েছে (Saper et Al 2004:2868-73)। ২০০৮ সালে প্রকাশিত অন্য একটি গবেষণায় রক্তাল্পতা,স্নায়ুতন্ত্র ও পরিপাকতন্ত্রের নানান সমস্যার পিছনে এইসব পন্য কে দায়ী করা হয়েছে (Dargan et Al 2008:463-74)।

আরেকটি অভিযোগ রয়েছে। আমি/আমরা নাকি পুঁজিবাদী সমাজের পেইড ব্লগার। এইসব বিরুদ্ধাচারণের জন্য আমাদের পয়সা দেওয়া হয়।এই প্রসঙ্গটি একদম শেষে আসব। এখন আলোচনা করলে ছন্দপতন ঘটে যাবে।

তো মূল প্রসঙ্গে যাই। আমাদের আলোচনা চলছিল আয়ুর্বেদ নিয়ে।

আগে যে অর্থে বায়ু বা পিত্ত বলা হতো, এখন সেটা পিত্ত বা বায়ু নাও হতে পারে। তিন হাজার বছর আগে পিত্তের মানে আজকে উদ্ধার সম্ভব নয়। কারণ সেই ট্রাডিশন অনুযায়ী আগামী তে কাজ হচ্ছে না। দুঃখের বিষয় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাতে আপডেটিং টা হয়নি। মূল আলোচনার বিষয় হচ্ছে method.কোন method এ কি চর্চা হয়েছে সেটাই আসল। method মেনে চলেছে বলেই আধুনিক চিকিৎসা একটা জায়গায় পৌঁছে গেছে আর মেথড মানেনি বলেই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা এক জায়গায় এসে থমকে গেছে। আজকে আমরা যেটা দেখছি এটা একটা অপভ্রংশ।

এই যে বিভিন্ন ধাতু আয়ুর্বেদিক ওষুধ এ পেলাম এটা আশ্চর্যের কিছু নয়। আসলে আয়ুর্বেদে এমন ঔষধ প্রয়োগ করা হতো অ্যাকিউট কেসে যেগুলো ভস্ম কিংবা ধাতু। ভস্ম হচ্ছে কয়েকটি টক্সিক ধাতু যেমন পারা, সোনা, রূপা। এগুলো কে জারিত করা হতো। যেমন আর্সেনিক জারিত করলে বিষ নয়। কিন্তু বিজারিত রূপ বিষাক্ত।

আয়ুর্বেদ কিন্তু প্রথম চিন্তা করে যে শরীর মনকে সুস্থ রাখতে গেলে তার পরিবেশ,তার জীবন যাপন, তার আচার আচরণ এগুলো কেও যুক্তিশীল হতে হবে। আধুনিক চিকিৎসা যেটা আজ উপলব্ধি করতে পেরেছে।

তথ্য যখন আমার হাতে কম, তখন আমি যতই তত্ত্ব বানাই ততই ভুল হবে। সেই ভুলটাই আয়ুর্বেদের ক্ষেত্রে হয়েছে প্রথম দিকে। আধুনিক যুগেও হচ্ছে‌।

আয়ুর্বেদের বর্তমান চেহারা এক কথায় লজ্জাজনক। আমাদের দেশে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার গুণমান নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পাঁচখানা ল্যাবরেটরী ও রাজ্য সরকারের একটি করে ল্যাব রয়েছে। হয়তো সেখানে NMR নেই। কিন্তু  AAS আছে HPLC, GC প্রত্যেক ল্যাবে আছে।এবার যদি আমি মনে করি, এক কোটি টাকা ব্যয়ে শুধুমাত্র কুমড়ো পাতা ও মূলোপাতা দিয়ে একটা বড়ি বানাবো এবং পাশে ১০৮টা গাছের নাম লিখে দেব, তাহলে সারা পৃথিবীর কোথাও কেউ বলবে না যে এতে কুমড়ো আর মূলা পাতা আছে বাকিগুলো নেই।

এই যে সমান্তরাল ভাবে আয়ুর্বেদিক ওষুধ এর ব্যবসা চলছে আর দাবি উঠছে রোগ সারছে এটা মারাত্মক খারাপ প্রবণতা।

ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা তে ব্যবহৃত সিঙ্কোনা গাছ  থেকে কুইনাইন, উচ্চরক্তচাপে সর্পগন্ধা থেকে রেসারপিন,আফিম থেকে ব্যথার ওষুধ মরফিন আধুনিক চিকিৎসার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু আয়ুর্বেদিক নিয়মমেনে গাছের অবিকৃত নির্যাস ব্যবহার আজকের দিনে হয় না। কারণ উদ্ভিদের প্রাপ্ত নির্যাসে একাধিক উপাদান উপস্থিত থাকে যার একটি বা দুটি উপাদান কার্যকরী বাকি অপ্রয়োজনীয়। আয়ুর্বেদ এই কোন ভেষজের কোন উপাদানের কতখানি কোন রোগের জন্য ফলদায়ী তা সুনির্দিষ্ট ভাবে খতিয়ে দেখারও কোনো সিস্টেম নেই। এই সমস্ত কারণে এই প্রাচীন চিকিৎসা বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছে।


তৃতীয় পর্ব।

হোমিওপ্যাথির বিরুদ্ধে কিছু বলা অত সহজ নয়। না একতরফা বিরোধিতা ভালো নয়। একথা অনস্বীকার্য যে অ্যালোপ্যাথি বনাম হোমিওপ্যাথি বিতর্ক বহুদিন ধরে চললেও মানুষের মধ্যে থেকে হোমিও চিকিৎসার প্রতি অন্ধ বিশ্বাসে চিড় ধরানো যায় নি। ১৯৮৪ সালের হিসাবে দেখা যাচ্ছে এদেশে ২.৭ লক্ষ আধুনিক চিকিৎসক, কবিরাজ ২ ৪ লক্ষ, হোমিওপ্যাথ, ১.১২ লক্ষ, ইউনানি ২৯ হাজার আর সিদ্ধা ১৮ হাজার। সাঁইত্রিশ বছর পর এই চিত্রটি কোথায় পৌঁছে গেছে সহজেই অনুমেয়। প্রশ্ন উঠবে এদের জীবন ও জীবিকারও। সেই হিসাবে এদেশে বর্তমানে জ্যোতিষ পেশায় যুক্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে প্রায় দশ কোটি দাঁড়িয়েছে। কাজেই স্বীকৃতি দিতে গেলে তাঁরাও বঞ্চনার অভিযোগ তুলবে।

প্রাচীন গ্রিক চিকিৎসাবিদ হিপোক্রেটিসের মত ছিল অসুস্থতা সারিয়ে তুলতে প্রকৃতিকে সাহায্য করাই চিকিৎসকের কাজ। রোমান আমলের চিকিৎসক গ্যালেনের মত ছিল উল্টো -- প্রকৃতিকে জয় করাই কাজ।গ্যালেনের শিষ্যরা গড়ে তুললেন অ্যালোপ্যাথি ব্যবস্থা। অ্যালোর অর্থ ভিন্ন বা উল্টো, গ্রিক 'পেথস্' অর্থে দুঃখ, কষ্ট থেকে প্যাথি।

এটা ঠিক প্রথম দিকে অ্যালোপ্যাথির চিকিৎসার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এতটাই ভয়াবহ ছিল যে লিডেনের চিকিৎসাবিদ্যার অধ্যাপক হারমান বোরহাভ (১৬৬৮-১৭৩৮) বলতে বাধ্য হলেন যে একেবারে কোনো চিকিৎসা না থাকলেই মানব সমাজের কল্যাণ হত।

এমন সময়ে হ্যানিম্যান (১৭৫৫-১৮৪৩) হ্যোমিপ্যাথি শুরু করলেন।'হোমো',হোমিওর অর্থ সদৃশ, like, similar)। এবং তিনিই সনাতনী চিকিৎসার নাম দিলেন অ্যালোপ্যাথি। ওনার সম্পূর্ণ নাম স্যামুয়েল ক্রিশ্চান হ্যানিমেন।ইনি তাঁর বিরাট সৃষ্টি The Organon প্রকাশ করেন ১৮১০ সালে। তাঁর মূল চিন্তা  like cures like; Law of Similia: Similia similibus curantor। তাঁর মতে মানুষের আধ্যাত্মিক জীবনীশক্তি (spiritual life force)  ব্যাহত হলে প্রকাশ পায় রোগ লক্ষণ।অসুখ হবার কারণ হলো আত্মার মতো যে জীবনীশক্তি মানুষ কে (সুস্থতা-অসুস্থতায়) সঞ্জীবিত রাখে সেই ভাইটাল ফোর্সের গতিময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টতে।

Organ of medicine কি বলছে।

When a person fall ill,it is only this spiritual self-acting automatic vital force, everywhere present in his organism, that is primarily deranged by the dynamic influence upon it by a morbific agent inimical to life;

হোমিওপ্যাথিক ঔষধ অকল্পনীয় ক্ষুদ্রমাত্রায় প্রয়োগ করা হয়। হ্যানিম্যানের তত্ত্ব অনুযায়ী ঔষুধের মাত্রা যত কম হবে তার শক্তি ও কার্যকারিতা তত বেশি হবে। এরকম অচিন্তনীয় লঘুকরণকে(dilution) বোঝা যাবে এভাবে --- একফোঁটা ঔষধ প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলে ভালোভাবে মিশিয়ে তার থেকে এক চামচ তুলে নিতে হবে। হ্যানিম্যান এর বিশ্বাস ছিল, ওষুধের বস্তুগত পরিমাণ যত কম হবে তার আধ্যাত্মিক নিরাময় শক্তি তত বেশি হবে। এবং তাঁর পরামর্শ ছিল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লঘুকরণ বাড়াতে বাড়াতে এমনস্তরে নামিয়ে আনা উচিত যাতে দ্রবণের মধ্যে মূল পদার্থের পরিমাণ শূন্য হয়ে যায়। এটা নাকি নিরাময় ক্ষমতা কে চরম মাত্রায় বাড়িয়ে দেয়। এই ধরনের ঔষধ খেয়ে ফলাফল পেতে পঞ্চাশ দিন ও লাগতে পারে।

তবে অচিরেই এই নিয়ে হোমিওপ্যাথি সমাজে ভাঙন ধরল। একদল বিশুদ্ধতাবাদী গোষ্ঠী, তাঁরা হ্যানিম্যান সাহেবকে অন্ধ ভাবে অনুকরণ করলেন কিন্তু আরেকদল নিম্ন কার্যকরী গোষ্ঠী যারা মনে করতে শুরু করলেন যে ঔষধ এর লঘুদ্রবনে মূল পদার্থের সামান্যতম উপস্থিতি দরকার।

এবারে হোমিওপ্যাথি ওষুধগুলো একটু দেখে নেওয়া যাক। ল্যাক্রিমা ফিলিয়া (ইদানিং অব্যবহৃত) তৈরি হয় ক্রন্দনরত বালিকার অশ্রুর থেকে, ভোদোরের ঘাম থেকে মেফিটিস,জ্যান্ত ছারপোকা চটকে সাইমেক্স লেকচুলারিয়াস, মানুষের প্রস্রাব বা সাপের মল থেকে অ্যাসিডাম ইউরিকিম, অ্যাস্টেরিয়াস রুবেনস (গুঁড়ো করা তারামাছ), এমনকি ঘা বা খোষপাজরার রস থেকে ও অনেক ওষুধ তৈরি করা হয়।


এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা একটি মন্তব্য করেছে যে অনাক্রম্যকরণের অভিজ্ঞতাবাদী অনুশীলনের সঙ্গে ওপর ওপর মিল দেখা গেলেও হোমিওপ্যাথির যথার্থতার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। আবার এটাও শোনা যায় লঘুকরণ করতে করতে  না কি ওষুধের পদার্থ বিলুপ্ত হয়ে পড়ে থাকে  এক রহস্যময় রশ্মি,  যা রোগ সারায়। সেন্টেসিম্যাল স্কেলে হ্যানিম্যান ৩০ ডাইলিউশন পর্যন্ত গিয়েছিলেন। নব্যপন্থীরা অবশ্য লঘুকরণের উপর জোর কমালেন। ৩ থেকে ৬ ডাইলিউশনের বেশি আজকাল প্রায় কেউই ব্যবহার করেন না।

(চলবে)


তথ্য সূত্র:

বিজ্ঞান কে মুখোশ করে, মার্টিন গার্ডনার।

(উৎস মানুষ)

বিকল্প চিকিৎসা চিকিৎসার বিকল্প? সুব্রত রায়

(মুক্তচিন্তা পাবলিকেশন্)

আয়ুর্বেদ ও বিজ্ঞান,উৎস মানুষ।

হোমিওপ্যাথি বনাম বিজ্ঞান, উৎস মানুষ ‌

Alternative medicine (2000), Encyclopedia of pseudo science.

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86929